ইন্টারনেটে আয়...!
ইন্টারনেট আবিস্কারের পর থেকে এখন পর্যন্ত প্রযুক্তিগত যত উন্নয়ন হয়েছে, হচ্ছে এবং সামনেও হবে শুধুমাত্র এর ভাল দিকটির ব্যবহারের কারণে। কারণ প্রতিটি আবিষ্কারের ভাল এবং মন্দ দুটি দিক আছে। সেই ভাল মন্দের ধারাবাহিকতা ইন্টারনেটও হাঁটছে! অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের দেশেও ইন্টারনেট ব্যবহারের ব্যতিক্রম নয়। তবে লক্ষণীয় বিষয়, বিশেষ করে আমাদের দেশে গত কয়েক বছরে প্রায় ৩ গুনেরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী বেড়েছে। এটাকে সাধুবাদ জানাতেই হবে। কারণ, প্রযুক্তি পণ্যের অপ্রতুলতার, ধীরগতি ও উচ্চ মূল্যের ইন্টারনেট এবং ইলেক্ট্রিসিটির বাঁধার মধ্যে থেকেই আমাদের দেশের তরুণরা নিজ চেষ্টায় এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু… !আমাদের তরুণ সমাজ যেভাবে ইন্টারনেটের আয়ের প্রতি ঝুঁকছে তাদের ১০০ জনের মধ্যে গড়ে খুব বেশি হলে ২০-৩০ জন সময়ের সাথে নিজেদের যোগ্যতা অর্জন করে ভাল কিছু করে, জেনে এবং নিজের প্রফেশনাল ক্যারিয়ারের সাথে সমন্বয় রেখে এসেছেন। আর বাকিরা কীভাবে এই কাজে নিজেদের যোগ্য করে তুলতে পারেন, এসব বিষয়ই তুলে ধরার চেষ্টা থাকবে আমাদের আজকের আলোচনায়।
কম্পিউটারের সঠিক ব্যবহার শিখুন:
আমাদের মধ্যে অনেকেই, বলতে গেলে প্রায় ৭০ শতাংশের বেশি কম্পিউটার ব্যবহাকারী আছেন যাদের কোন প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান নেই কম্পিউটার সম্পর্কে। বলা যায়, অন্যদের দেখে অনেকেরই কম্পিউটারের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি হয়। এভাবেই একসময় নিজের কাছে কম্পিউটার চলে আসে। প্রাতিষ্ঠানিক ভাবে প্রশিক্ষণ না নিলেও আমাদের মান সম্পন্নভাবে কম্পিউটারের ব্যবহার জানতে হবে। নিজের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমার পরিচিত এমন অনেকেই আছেন যারা কম্পিউটারের এক্সপার্ট তবে, এমএস ওয়ার্ড অ্যাপ্লিকেশান সফটওয়্যারে বিজয় বাংলা এবং ইংরেজি টাইপ করতে পারেন না। কম্পিউটারে বিজয় বাংলা এবং ইংরেজি টাইপ করতে না পারার কারণে নিজের সামান্য কাজের জন্যও আমাদের অন্যের ওপর নির্ভর করতে হয়।
ইন্টারনেটের ব্যবহার:
বর্তমান যুগে তরুণদের কাছে সব চেয়ে আগ্রহের বিষয় হচ্ছে ইন্টারনেট।যারা ইন্টারনেটে আয় করতে চায়, ডকুমেন্ট এটাচ করে মেইল করা, সাবলীলভাবে বিভিন্ন বিষয় সার্চ করে বের করার মতো দক্ষতা থাকতে হবে। ঠিক মত ইন্টারনেটের ব্যবহার না জেনে ধরুন আপনি ওয়েব রিসার্চের কাজে বিড দিলেন। ভাগ্যক্রমে কাজও পেলেন তবে, বুঝতে পারছেন না কীভাবে কাজটি করবেন। এটা কি ভাল হবে?
ইমেইল, মেসেঞ্জারের ব্যবহার শিখুন:
ওপরে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে বলেছি। ফ্রিল্যান্সিং করতে কিন্তু ইমেইল, মেসেঞ্জারের সঠিক ব্যবহার জানতে হবে। এছাড়া বায়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব নয়। ফ্রিল্যান্সিং জগতে ইমেইল এবং মেসেঞ্জার এমন দুটি পথ যেগুলো ব্যবহার না করতে পারলে আপনি কখনও বায়ার ধরতে পাবেন না। তাই আমি রিকমেন্ড করবো এভাবে আয় করতে আগ্রহীরা অাগে ইয়াহু, স্কাইপি, জিটক মেসেঞ্জারের ব্যবহার শিখুন।
ধৈর্য:
ধৈর্য, অধ্যবসায় এবং সময় এসব কিছু ফ্রিল্যান্সিং এর পূর্বশর্ত। কারণ আমরা চাইলেই একদিনেই একাউন্ট সাইন-আপ করে কাজ পেয়ে যাব না। নিজে বুঝুন আগে কোথায় কি করতে হবে, না বুঝলে ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে অনেক গ্রুপ-ফোরাম এবং ফেসবুক পেজ আছে সেখানে জয়েন করুন। আপনাদের সমস্যাগুলো বলুন। কেউ না কেউ অবশ্যই সাহায্য করবে।
অভিজ্ঞদের সাথে আলোচনা করুন:
নতুন ও অনভিজ্ঞ একজনের সঙ্গে কথা বললেই অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সার বুঝতে পারবেন। তার সাথে আপনার সকল সমস্যা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করুন। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই তার অবসর সময়ে। তার থেকে জেনে নিন, তিনি কখন অবসর থাকেন। নয়তো, প্রশ্নগুলো ইমেইল করুন। তিনি অবশ্যই আপনাকে সদুত্তর দেবেন।একটা কথা মনে রাখবেন বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সার মুক্ত মনের অধিকারী। তারা চান অন্যকে সহায়তা করতে। অভিজ্ঞদের সাথে দীর্ঘ সময় আলোচনায় যাবেন না। এতে, আপনারই ক্ষতি হবে। কারণ, কথা পিঠে অনেক কিছুই আলোচনা বহির্ভূত বিষয় চলে আসবে। এতে আপনি যে উদ্দেশে তার কাছে যাবেন তার কিছুটা হলেও ব্যাঘাত ঘটবে।
ফ্রিল্যান্স মার্কেটপ্লেস, আপনার পছন্দের কাজগুলো চিনুন:
অভিজ্ঞদের সাথে আলোচনার একটা বিষয় এটা হতে পারে। আপনি কীভাবে মার্কেট প্লেস চিনবেন। কোনটা আপনার জন্য ভাল হবে। লক্ষ করুন, সারা বিশ্বে অনেক রেপুটেড ফ্রিল্যান্স সাইট আছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য: oDesk.com,Freelancer.com, eLance.com ইত্যাদি।
অর্থ উত্তোলন পদ্ধতি: সাইটগুলোতে কাজ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে টাকা হাতে পাওয়াটা কিছুটা কষ্টকর হলেও আমাদের দেশের তরুণরা কাজ করা থেকে পিছিয়ে নেই। বর্তমানে প্রতিটি ফ্রিল্যান্সিং সাইটই আন্তর্জাতিক ডেবিট মাস্টার কার্ড দিয়ে অর্থ উত্তোলনের সুবিধা দেয়, সাথে মানিবুকার্স, পেপাল এবং ওয়েবমানি ট্রান্সফারের মাধ্যমে সামান্য কিছু চার্জ দিয়ে নগদ অর্থ দেশের ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে হাতে আনা যায়।
অতঃপর আয়:
ওপরের প্রতিটি স্টেপ কোনো না কোনো ভাবে আপনাকে মানতেই হবে। ধৈর্য নিয়ে নিয়ে কিছু পথ পাড়ি দিতে পারলে আমাদের সাফল্যের জন্য আর বেশি অপেক্ষা করতে হবেনা। মার্কেটপ্লেসগুলো চেনার সাথে সাথে আপনার পছন্দের কাজ শিখুন। যদি ছোট কাজও হয়, যে কাজে আপনি স্বাচ্ছন্দবোধ করেন, সেই কাজ করুন। কাজ করবেন, আয় করবেন সাথে প্রতিনিয়তই নিজের দক্ষতা বাড়াতে চেষ্টা চালিয়ে যাবেন প্রযুক্তির সাথে।
No Comment to " ইন্টারনেটে আয়...! "